জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে এ ঐক্যমতের মধ্য দিয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সালাম হলে বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের পর্যালোচনা ভিত্তিক এক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সদ্য ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২১-এ আত্মপ্রকাশ পাওয়া নতুন রাজনৈতিক বুদ্ধি ও জ্ঞানের বার্তা বাহি বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদ এই সভার আয়োজন করে। উল্লেখ্য আত্মপ্রকাশের পর থেকেই ভিপি নূর ও রেজা কিবরিয়ার নতুন দল বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সাথে একাত্ম এই পেশাজীবী অধিকার পরিষদ নামক এ প্লাটফর্মটি অল্প সময় কালের মধ্যেই সমগ্র বাংলাদেশেই ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে। কিবরিয়া ও ভিপি নূরের হাতকে শক্তিশালী করেছে।
বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা আহবায়ক ডেন্টিস্ট জনাব জাফর মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনা করেন বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব জনাব নিজামুদ্দিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী জনাব আ.স.ম আব্দুর রব, প্রফেসর ডক্টর আসিফ নজরুল, গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব জননন্দিত নেতা ভিপি নুরুল হক নূর, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান ও ফারুক হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিশিষ্ট ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল ভাই প্রমুখ।
আলোচনা শীর্ষক পেশাজীবী অধিকার পরিষদের এ অনুষ্ঠানের পেশাজীবীদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির লিখিত পত্র পাঠ করেন এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক জনাব তানভীর ইউসুফ ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গণঅধিকার পরিষদের নেতা জনাব ফারুক হাসান বলেন, যদি মানুষের অধিকার, দাবি দাওয়া আদায়ে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতির শিকার হতে পারি, জুলুমের শিকার হতে পারি, হামলা মামলার শিকার হতে পারি, যদি আমার এই বেক্তিগত ত্যাগের বিনিময়ে এদেশে পরিবর্তন আসে তাহলে আমরা সেই ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত আছি। এরপর বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা আব্দুর রহমান, এবং পেশাজীবী পরিষদের মানিকগঞ্জ জেলা ও টাঙ্গাইল জেলার নেতৃবৃন্দ। এরপর মঞ্চের বক্তব্যস্থলে উঠে আসেন বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক জনাব রাশেদ খান l তিনি প্রথমেই দৃপ্ত কন্ঠে প্রশ্ন করেন, “দেশ কি ভালো চলছে কিনা”? তার এ প্রশ্নে সমস্বরে উত্তর ধনীত হয় “দেশ ভালো চলছেনা” l জনাব রাশেদ খান বলে উঠেন, দেশ ভালো চললে আমাদের এখানে বসতে হতোনা, কথা বলতে হতোনা। তিনি তথ্য মন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন – যে দেশে নাকি সবসময় খারাপ খবর প্রচার করা যাবেনা ǃ তিনি উপস্থিত সাংবাদিক ভাইদের উদ্দেশ্য করে বলেন আপনারা চাইলেই সব বক্তব্য কভার করতে পারেননা। কেন? কারণ, আমাদের মন্ত্রী কিন্তু বলেই দিয়েছেন সব সময় খারাপ সংবাদ প্রচার করা যাবেনা। এখন তারা দেশ চালাচ্ছেন। কিভাবে দেশ চালাচ্ছেন, তা আমরা তাদের কর্মকান্ড দেখে সহজেই অনুধাবন করতে পারি। আপনারা দেখেছেন, যে কক্সবাজারে দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসেন, সেখানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসাবে দাবি করা ছাত্র লীগ নেতারা কি ঘটনা করেছে দেখেছেন? তারা একজন গৃহবধূকে তার স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। আপনারা দেখেছেন, সাভারের একই নামের এক নেত্রী কি বলেছে যে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাদের হাত ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবে? এ বক্তব্য শুনলেই বুঝা যায় তারা কিভাবে দেশ চালাচ্ছেন । আজকে মুরাদরা কিভাবে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে তা সচেতন সকলেরই বোধগম্য হয়েছে।
জননন্দিত সর্বজনবিদিত গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ভিপি নূর বলেন, দেশে এমন একটা অবস্থা যে পার্শবর্তী দেশে আমাদের লোক পাওয়া যায় যাকে উত্তরা থেকে তুলে নেয়া হয়েছিল। মানে পার্শবর্তী দেশকেও যুক্ত করে আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পর রাষ্ট্র চালাচ্ছি। আজকে কথা ছিল আমরা সাম্য, মানবতাবাদী, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবার, কিন্তু আমরা বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে ছিটকে পড়েছি। সারা বিশ্ব আজকে আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দেখেনা, আমাদের গণতান্ত্রিক দেশ বলে মূল্যায়ন করেনা । স্বাধীনতার ৫০ বছরে আজকে সারা বিশ্বে যেখানে আমাদের গণতান্ত্রিক অর্জন ও সার্থকতা নিয়ে লেখালেখি হবার কথা, টক্ শো হবার কথা , আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা হবার কথা, সেসময় আমাদের জাতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা শুনতে হয়। এরচেয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছরে লজ্জার কিছু হতে পারেনা। আমরা মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধকে এ সরকার চপেটাঘাত করেছে, বীণা ভোটের সরকার বেবস্থা জারি রেখে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করে। মুক্তিযোদ্ধাদের চপেটাঘাত করেছে তারা, বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, সেখানে তারা রাষ্ট্রপরিচালনা থেকে মানুষকে এক্সক্লুড করে দিয়েছে। যেটা আইয়ুব খান করতে চেয়েছিলো, ৭০ এর নির্বাচন মেনে না নিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নাই, আজ সেই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে জনগণকে ফেলে দিয়েছে। জনগণকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এরচেয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি, মুক্তি যোদ্ধাদের প্রতি অসম্মান আর কিছু হতে পারেনা।
ঢাকা বিশ্যবিদ্যালয় আইন অনুষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর আসিফ নজরুল মঞ্চের বক্তব্যস্থলে প্রতিবাদী কণ্ঠে বলেন কদিন আগে সরকার যে সাধীনতার ৫০ বছর সুবর্ন্যযয়ন্তি পালন করলো তাতে আওয়ামী লীগ আয়ামী লীগকেই ডাকেনি। তাজউদ্দিনকে কথা বলা হয়েছিল? জাতীয় চার নেতার কথা বলা হয়েছিল? মুক্তি যুদ্ধের সর্বাধিনায়কের কথা বলা হয়েছিল? এমনকি ওখানে আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা নেতারা পর্যন্ত ছিলোনা, ওখানে বাংলাদেশীই ছিলোনা। ওখানে উপস্থিত ছিল স্বৈরতন্ত্রের, ফেসিবাদের কিছু মুখ। তিনি বলেন, গত ৫০ পঞ্চাশ বছর নয়, স্বৈরতন্ত্র দেখতে পাই আমরা গত কয়েক সপ্তাহে দেশের অবস্থার দিকে তাকালে। অন্যদিকে যদি গত ৫০ বছরের কথা বলতে গেলে রব ভাইয়ের কাছে যায়। তিনি পাকিস্তান আমল, সৈর আমল, সব আমলই দেখেছেন। তাহলে আমি উনার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই যে কোনো আমলে কি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের টাকা লুটপাট হয়েছিল? কোনো আমলে কি বালিশের দাম চল্লিশ হাজার টাকা ছিল? কোনো আমলে কি দিনের ভোট রাতে হয়েছিল? কোনো আমলে কি কেউ ঘুমিয়েছে ঢাকায় আর উঠে দেখে সে শিলং-এ, এমনকি হয়েছিল? এরচেয়ে জঘন্য অবস্থা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো ছিলোনা। ড. নজরুল জোর দিয়ে বলেন এরা উন্নয়ন বলতে খালি ইনফ্রাস্ট্রাকচার আর বড় বড় বিল্ডিং দেখাতে পারে, স্ট্রাকচার দেখায়। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নেতারা জনগণের প্রতি দায়িত্ববান থাকেন কারণ তারা তখন চিন্তা করেন যে জনগণ খুশি হয়ে তাকে নেতা নির্বাচিত করেছে। তাদের একটি দায়বদ্ধতা থাকে। এটা খুবই সিম্পল জিনিস। না বোঝার কিছু নেই। এ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে হচ্ছে অবাধ ভোটাধিকার, সুষ্ঠু গণতন্ত্র। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে সাম্য। কোনো দুর্নীতি করা যাবেনা। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করা যাবেনা। দেশের মানুষকে অত্যাচার করা যাবেনা। দেশের স্বার্থ অন্য দেশকে বিকিয়ে দেয়া যাবেনা। যারা এগুলা করে তারা নাকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি, আর অন্যেরা নাকি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ǃ
উপস্থিত সকলের করতালির মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশ এখন পাকিস্তানী শাসন বেবস্থার চেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে চলছে। ৫০ বছরে দেশ অনেক পিছিয়ে গিয়ে এখন আইয়ুবী আমলে আছে। সরকার কথায় গণতন্ত্র কিন্তু কাজে আইয়ুব খান। আগে পাকিস্তান আমলে জেলে গেলে জামিন পাওয়া যেত, এখন তা হয়না। আইয়ুবী আমলে জেলে গেলে টর্চার হতোনা, মারধর করা হতোনা। এখন গণতন্ত্রের এমন অবস্থা হয়েছে যে, সরকারের বিরোধীতা করলে টিকে থাকা যায়না। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবোনা, ইচ্ছাও নেই। সাংবাদিকরা হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ফ্রন্টলাইন। কিন্তু তারা ফ্রন্ট লাইনে আসতে যে স্বাধীনভাবে লিখতে পারা তাতে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র এমন হওয়া উচিত যে জনগণের সরকারি দলকে পছন্দ হলে রাখবে, নাহলে বের করে দিবে। এ ক্ষমতা আমাদের অর্জন করতে হবে। আমরা দেখেছি যারা বিভিন্ন অপরাধ করে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছে, ওদের অনেকের উপর সেঙশন পড়েছে। তারা যদি এর অর্থ ভালো করে বুঝতে পারে, তাহলে উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে বসবাসের চিন্তা বাদ দিয়ে, কিছু অগণতান্ত্রিক দেশ যেমন ভেনিজুয়েলিয়ায় থাকার কথা ভাবতে শুরু করে দিতে পারে।
শীর্ষ নেতা রেজা কিবরিয়া সামনে উপবিষ্ট সমর্থক, শুভাকাঙ্খীদের আহবান করেন যেন তারা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচন নিয়ে কাজ শুরু করে দেন, কেননা, তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন মুখী একটি দল। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা এই দেশ পরিচালনা করবো ইনশাল্লাহ। এ গণতান্ত্রিক অবকাঠামোতে নির্বাচনী কাজ করা সম্ভব নয়, কিন্তু তত্তাবধায়ক সরকার, জাতীয় সরকারের বা জাতিসংঘের অধীনে গণতান্ত্রিক অবকাঠামতে আমরা নির্বাচনে লড়াই করার জন্য কাজ করার আশা করি। আমরা এ সরকারকে বাধ্য করবো এই ৩ চয়েসের যে কোন একটিতে যেতে বাধ্য হতে। আমি আবারো বলছি আমরা আওয়ামী লীগের আন্ডারে কোনো নির্বাচনে যাবনা। কারো কোনো সংশয় থাকলে আমরা পরিষ্কার করতে চাই যে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবার ইচ্ছা আমাদের নেই এবং এই সরকারের বিরুধীদল হবার কোনো শখ আমাদের নেই। বর্তমান বিরুধী দলকে মানুষ কি পরিমান সম্মানের চোখে দেখে তা আপনারাই এনডিফাজ করতে পারেন। আমরা ইনশাল্লাহ জনগণের শক্তিতে উঠে আসবো। অন্য দলের সাথে তুলনা করবেননা, নিজেরা করবেননা, এবং অন্য কাউকে তুলনা করতে দিবেননা। আমরা ভিন্ন। আমরা জনগণের দল। আমরা জনগণের স্বার্থ ইনশাল্লাহ রক্ষা করব।
সবশেষে বক্তব্য দিতে মঞ্চের বক্তব্যস্থলে উঠে আসেন বর্ষীয়ান নেতা, বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী জনাব আ.স.ম আব্দুর রব l তিনি বলেন, আজকের এই বিশ্বে কোনো জাতি যত শক্তিশালী হক এককভাবে বাঁচতে পারেনা। কক্সবাজারে কি হচ্ছে? কক্সবাজার হচ্ছে “জাতিসংঘের অফিস”, “কক্সবাজার হচ্ছে রোহিংগা” , “কক্সবাজার হচ্ছে সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত”, “একমাত্র প্রবাল বালিদ্বীপ সেন্টমার্টিন”, এবং “কক্সবাজার হল সারা পৃথিবীর মানুষের, পর্যটকদের” l কক্সবাজারে সারা পৃথিবীর মানুষ তাকিয়ে আছে। সেখানে একজন পর্যটকের মাকে, তার স্ত্রীকে, শিশুদের আবদ্ধ করে মেরে ফেলবে বলে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। এমন একটি দিন কি এ সরকার দেখতে পারবে যেখানে নারীর উপর নির্যাতন হয়নি? সন্ত্রাসী হয়নি, চাঁদবাজি হয়নি, খুন হয়নি। আমরা আগে মায়ানমারকে বলতাম মঘের মুল্লুক। আমরাতো ওটাকে ছাড়িয়ে গেছি। এ সময় আ.স.ম. আব্দুর রব পত্রিকা নেড়ে দেখান তাতে লেখা আছে, ‘এলাকায় যদি থাকতে হয়, নৌকা মার্কায় ভোট দাও। মানে দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের জন্য রাজনীতি করার দরকার নেই। ইজ্জতের সাথে বাঁচতে হলে, তাই এই স্বৈরাচারকে তাড়াতে হবে বাংলাদেশ থেকে। এরা নির্মম, এরা নিষ্ঠুর। মানুষের প্রতি এদের কোনো মায়া মমতা নেই। বাংলাদেশের মাটি থেকে মানবিক মূল্যবোধ বিদায় করেছে এরা। ইতালীর ফ্যাসিস্ট পার্টিকেও এরা ছাড়িয়ে গেছে। হিটলারের নাৎসি বাদীদের মত এরা ভয়, শঙ্কা, সন্ত্রাস, খুন, রাহাজানি, দুর্বৃত্তায়ন, মিথ্যা, মামলা, হুলিয়া দিয়ে নিয়ন্ত্রণের পথ বেছে নিয়েছে; এক লক্ষের উপর রাজনৈতিক বন্দী আছে, যদি ভালোভাবে বিদায় নিতে চান, বিদায়তো নিতে হবে, যেতে হবে। পৃথিবীতে কেউ চিরস্থায়ী হয়নি। মুসোলিনি হয়নি, হিটলারও হয়নি। আপনাদেরকে যেতে হবে। অবিলম্বে রাজবন্দীদের মুক্তি দেন, নাহয় অভিশাপে ফেঁসে যাবেন।
আ.স.ম আব্দুর রব দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন, আমি মানুষের জন্য রাজনীতি করি, দেশের জন্য রাজনীতি করি। তিনি উদ্ধৃত করেন যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছেন, আমাদের সম্মান নাকি বেড়েছে। আমাদের সম্মান এতই বেড়েছে যে একজন প্রধানমন্ত্রীকে আরেক দেশের একজন প্রতিমন্ত্রী রিসিভ করেছে। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ভর্তি করাচ্ছেন লটারি দিয়ে, যদি লটারি দিয়েই ভর্তি হয়, তাহলে মেধার দরকারটা কি? কি শুরু হয়েছে? চাকরি লাগবে? সরকারি দল করেন, কিছু লাগবেনা। গতকাল আমাকে একজন বললেন, জানেন? গতকাল একটি জায়গায় ১১০০ লোকের উপরে চাকরী হয়েছে, এদের কারো ইন্টারভিউ লাগেনি। দলের সংস্কৃতি, সন্ত্রাসের সংস্কৃতি, বেক্তিকেন্দ্রিকতার সংস্কৃতি, কতৃত্ববাদের সংস্কৃতি, জনগণের রুদ্ররোষ সন্ত্রাস দিয়ে ঠেকানোর সংস্কৃতি আমাদের মোকাবেলা করতে হতে এদেশে থাকতে হলে। বাঁচতে হলে লড়তে হবে, লড়াই করে বাঁচতে হবে। একটা কথা না বললেই নয়। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের কাছে ছিলেননা। খন্দকার মোস্তাককে বলা হয়েছিল, শেখ মুজিবকে চান? নাকি স্বাধীনতা চান? আমরা বলেছিলাম, আমরা দুটোই চাই। কিসের স্বাধীনতার ৫০ বছর? দেশ স্বাধীন ছিল ১৭ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারী পর্যন্ত। সবশেষে তিনি বলেন, জনগণ ব্যক্তি সরকার চায়না, তারা নিজের সরকার চায়, শ্রমজীবীদের সরকার চায়, পেশাজীবীদের সরকার চায়, কৃষকের সরকার চায়।
জনাব আ.স.ম. আব্দুর রবের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এই অত্যন্ত সুন্দর পর্যালোচনামূলক অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব জনাব নিজামুদ্দিন সাংবাদিক ভাইদের সহ আহবায়ক জনাব জাফর মাহমুদকে ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানটিকে আলোকিত করতে আরো অবদান রাখে পেশাজীবী অধিকার পরিষদের জেলা ভিত্তিক প্রতিনিধিদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। মিডিয়া কভার করতে দেশের শীর্ষ স্থানীয় এনটিভি, এটিএন বাংলা, যমুনা টিভি ও সময় টিভির রিপোর্টাররা ও কেমেরাম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।