- Advertisement -spot_img
HomeUncategorizedঢাকার তারকা হোটেলেগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

ঢাকার তারকা হোটেলেগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

- Advertisement -spot_img

শুরু করা যাক ঢাকা এয়ারপোর্টের কাছাকাছি হোটেলগুলো দিয়ে। ঢাকার খিলক্ষেতের অন্তর্গত নিকুঞ্জ অভিজাত এলাকায় ২টি হোটেল আছে। ১টি তিন তারকা বিশিষ্ট হোটেল, নাম: ঢাকা রিজেন্সি। আরেকটি হোটেল লা মেরিডিয়ান যেটি একটি পাশ্চাত্য ধাঁচের পাঁচ তারকা হোটেল। ২টি হোটেলের পাশ দিয়েই এয়ারপোর্ট রোড গিয়েছে।

ঢাকা রিজেন্সি এন্ড রিসোর্ট: এটি মোটামোটি নামকরা একটি অভিজাত হোটেল। পুলিশ, আনসার মিলেই এ হোটেলের নিরাপত্তায় থাকেন। এছাড়া নিজস্ব গার্ড আছে। কিন্তু নিরাপত্তা কড়াকড়ি আরো জোরদার করা দরকার বলে মনে হয়েছিল। এ হোটেলের বিভিন্ন ফ্যাসিলিটিজ এ দেখতে গেলে তেমন একটি রেস্ট্রিকশন নেই। হোটেলটির উপরে পুরো ছাদ জুড়ে রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা আছে, এটির সার্ভিসের লোকেরা উন্নত মানের সেবা দেবার জন্য চেষ্টা করেন। হোটেলের আতিথেয়তা মোটামোটি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মোটামোটি। হোটেলের নিচে একটি মার্কেট আছে যা হোটেলের সার্ভিসের সাথে সংযুক্ত নয়, এবং হোটেল রেসরটির সৌন্দর্যের অনেকটাই নষ্ট করেছে।হোটেলটির সামনে পার্কিং এরিয়া নেই, তবে নিচে আন্ডারগ্রউন্ড পার্কিং সুবিধা আছে।এর পিছন দিকে ইমার্জেন্সি এক্সিটের ব্যবস্থা আছে।

লা মেরিডিয়ান ঢাকা: এ হোটেলটির বৈশিষ্টের সবচেয়ে বেশি যেটা চোখে পরে তা হচ্ছে এর নানা রকম ব্যাংকোয়েট হলসমূহ যেগুলোতে কাষ্টমাররা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারবে। একেক ধাঁচের অনুষ্ঠানের জন্য অনুরূপ উপযুক্ত হলরুম – এ হোটেলের রয়েছে। তাছাড়া এর ছাদের এক পাশে বৃহৎ আকারের একটি ইনফিনিটি সুইমিং পুল আছে। এ হোটেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক উন্নত। এ হোটেলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মনিটরিং কন্ট্রোল রুম সদা তৎপর রয়েছে। আনসার পাহারা আছে, তারা ড্রিল করে থাকে। তাছাড়া পর্যাপ্ত গার্ড রয়েছে। একটি হলে ‘ঢাকা সামার রানওয়ে’ নামে একটি পাশ্চাত্য মানের ফ্যাশন শোতে ২০১৯ সালে উপস্থিত হয়েছিলাম। বেশ কিছু বিদেশী অতিথিও উপস্থিত ছিলেন। যে দিকটি খারাপ লেগেছিলো সেটা হচ্ছে এ হোটেলের নিচ তলার দক্ষিণাংশের স্পেস-এ একই আয়োজক পরের ২দিন ডিসাইনারদের ফ্যাব্রিক ক্লোদিংস এর মেলা করেছিলেন যেটাতে একেবারেই কাস্টমার হয়নি। এ হোটেলের আতিথেয়তা মোটামোটি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মানসম্পন্ন।

অন্যদিকে ঢাকার বনানীর ১১ নম্বর রোডের শেষ মাথায় ব্রিজের ওপারে ২টি তিন তারকা হোটেল আছে যেগুলোর নাম যথাক্রমে আমারি হোটেল ও লেক শোর হোটেল।

আমারি হোটেল: এটি বেশ উঁচু বিল্ডিং নিয়ে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর ভিতরে লবির মাঝে লম্বা-লম্বি করে মাছের ইকুরিয়াম করা হয়েছে যা দেখতে অদ্ভুত লাগে। এ হোটেল একেবারে উপরের তলায় রেস্টুরেন্ট অবস্থিত এবং বেশ বড় পরিসরে সাজানো থাকে বুফের আয়োজন। বুফে টেবিলের অপরদিকে রয়েছে শেফদের অবস্থান যেখানে তারা হালাক আইটেমস গুলো আপনার সামনেই বানাবে। এ হোটেলের নিচ তলায় একটি হল রুম আছে যেখানে একবার কিছু শিল্পের ফ্যাব্রিক এক্সপোজারের মডেল ওয়াক দেখতে গিয়েছিলাম। আয়োজনটি মোটামোটি মানের ছিল। অন্যদিকে এ হোটেলের আতিথেয়তা নজর করা না হলেও মন্দ নয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বেশ ভালো। আমারি হোটেল তাদের এন্ট্রান্স-এ গাড়ি চেকের বিষয়ে বেশ কড়াকড়ি এবং গ্রাউন্ড থেকে গাড়ির তলদেশের ছবিও ধারণ করে। এ হোটেলের লবিতে ঢুকতে হলে আর্চ-ওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে, সিকিউরিটির অফিসারের সার্চের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। ইমার্জেন্সি এক্সিট সিস্টেম উন্নত।

লেইক শোর হোটেল: এ হোটেলটি একটু অন্ন ধাচে গড়া। এর কতৃপক্ষ উঁচু বিল্ডিং না করে বরং সামনে অনেখানি জায়গা রেখেছে পার্কিং এর জন্য। পার্কিং এলাকা বেশ সুন্দর, গাছ-পালা দিয়ে ঘেরা। এ হোটেলের খাবার বেশ মজাদার, টাটকা ও সুস্বাধু মনে হয়েছিল। তাছাড়া লেকের পাশে অবস্থিত এ হোটেলটিতে নিরিবিলি পরিবেশ বিরাজ করে। এ হোটেলের আতিথেয়তা পরিশীলিত। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভালো।

স্পেস দা এপার্টমেন্ট: তিন তারকা বিশিষ্ট এ হোটেলটি গুলশান-২ এর অপরপ্রান্তে ৫৭ নম্বর রোডে অবস্থিত । এদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চমৎকার। গার্ডরা বেশ এলার্ট। গাড়িসহ ইমার্জেন্সি ড্রাইভ আছে। খাবারের মান অপূর্ব। অতিথেয়তা চমৎকার।

ফোর পয়েন্ট বাই শেরাটন: এ হোটেলটি একেবারে গুলশান-২ সার্কেলের পাশে অবস্থিত বেশ নজর করা ২৬ তলা উঁচু ভবন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে খোদ সার্কেলের পাশে অবস্থিত বলে জায়গার অভাবে হয়তো নিরাপত্তা কাঠামোগুলো যেমন এন্ট্রি সিকিউরিটি গেইট, নিরাপত্তা ফেন্স করা সম্ভব হয়নি। তবে প্ৰয়োজনে ২ পাশের কাচের তৈরী এন্ট্রাসের কাছে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তবে এ হোটেল গুলশান-২ চত্বরের ওখানে অবস্থিত বলে সবকিছু হাত নাগালের মধ্যে পাওয়া যায়। এছাড়া এ হোটেলের আতিথেয়তা বেশ ভালো। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাও বেশ ভালো।

সিক্স সিসন্স: গুলশানের ৯৬ নম্বর রোডের মাথায় লেকের পাড়ে অবস্থিত সুউচ্চ সিক্স সিসন্স হোটেলটি বেশ নজরকাড়া। এটি দূর থেকে দেখতে বেশ জমকালো। সুদৃশ্য এ হোটেলটির আপার দুতলায় একবার ফ্যাশন শো অনুষ্টানে উপস্থিত হয়েছিলাম। সেটি বেশ আড়ম্বপূর্ণ ছিল। এটি শুধু আয়োজকের কারণেই নয়, এর কাঠামোর কারণেও সম্ভব হয়েছিল।

Fashion Show at Six Seasons {organized by Panache}-Image taken by the author
Fashion Show at Six Seasons {organized by Panache} -Image taken by the author
Fashion Show at Six Seasons {organized by Panache} -Image taken by the author
Fashion Show at Six Seasons {organized by Panache} -Image taken by the author

অন্যদিকে এর উওপরের তলায় রিসেপশন হল ফ্লোরে একবার ওয়েডিং অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সার্ভিস মোটামোটি ছিল। টপ ফ্লোরে সুইমিং পুল আছে। অন্নদিকে একটি ক্যাফে বার আছে যেখানে সুস্বাধু পানিও পাওয়া যায়। এ হোটেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো। এর ইমার্জেন্সি এক্সিট ব্যবস্থা চমৎকার। সার্বক্ষণিক পুলিশের প্রহরা বেশ চোখে পড়েছিল। এ হোটেলে প্রবেশ করতে হলে সবাইকেই এন্ট্রান্স চেকিং আর্চওয়ে এবং সিকিউরিটি অফিসার সার্চ এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। লবিতে সার্বক্ষণিক স্থির দন্ডায়মান গানম্যান চোখে পড়ে।

বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোনের হোটেলসমূহ: এখানে বেশ কিছু দুই ও তিন তারকা হোটেল আছে, যেমন – এস্কট দা রেসিডেন্স, ডেইস হোটেল, ন্যাসেন্ট গার্ডেনিয়া, এশিয়া প্যাসিফিক হোটেল ইত্যাদি। সরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অধীন ডিপ্লোমেটিক জোনে থাকায় এ হোটেলগুলোর বাহ্যিক নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হয়না অর্থাৎ শান্তিকালীন সময়ে বড় দুর্ঘটনা হবার সম্ভাবনা নেই {প্রাকৃতিক ও অগ্নিকান্ড ব্যতিত} l এরপরও ভিআইপি ভিসিটেরর সময় এরা বাড়তি নিরাপত্তার বেব্যস্থা করে থাকে।

রাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন: যদিও বনানী এলাকায় পড়েছে কিন্তু এ হোটেলটি আবার ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন। এ হোটেলটিতে যেতে হলে এয়ারপোর্ট রোড ব্যবহার করতে হবে। এর আরেকটি উল্লেখযোগ্য লোকেশন হচ্ছে এটি মিরপুর-বিমানবন্দর ফ্লাইওভার বা মাটিকাটা ফ্লাইওভারের পূর্বপাড়ে অবস্থিত। এ হোটেলটির চারপাশে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা বলে নিরাপত্তা এমনিতেই ভালো। এর নিরাপত্তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো এটির কাঠামো। এর সামনে অনেক জায়গা নিয়ে পার্কিং এলাকা যেটি পার হয়ে হোটেলে ঢুকতে হয়। তাছাড়া মেইন রোড থেকে পার্কিংয়ে ঢুকতে হলেও নিরাপত্তা চেকিং পোস্ট হয়ে যেতে হয়। অন্যদিকে এ হোটেলের জাকজমকপূর্ণতা মোটামোটি মানের। আতিথেয়তা মোটামোটি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মোটামোটি ভালো । খাবারের মান ভালো বিশেষ করে এর বুফে সেবার মান বেশ নামকরা।

Hotel Raddisson Blue at the periphery of Banani, Dhaka

পান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেল: ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ হোটেলটি সরকারি ব্যবস্থাপনার পর্যটন কর্পোরেশনের অধীন ‘পান প্যাসিফিক হোটেলস এন্ড রিসোর্টস’ দ্বারা পরিচালিত পাঁচ তারকা বিশিষ্ট একটি পুরোনো বিলাসবহুল হোটেল। হোটেলটির ইমার্জেন্সি ড্রাইভিং এক্সিট আছে। এছাড়া সরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা সর্বদা উপস্থিত থাকেন।

Attribution: The author of the image is Nahid Sultan, CC BY-SA 4.0
https://creativecommons.org/licenses/by-sa/4.0, via Wikimedia Commons

তাছাড়া, এ হোটেলটিতে প্রায়ই ভিআইপি ভিসিট হবার কারণে রমনা পুলিশ প্রায় সময়ই এখানে উপস্থিত থাকে। তবে আর্চওয়েতে নিরাপত্তা পেশাদারিত্বের মান আরো বৃদ্ধি করা যেতে পারে। আমরা একবার বিদেশী নিরাপত্তা বিশ্লেষকসহ এ হোটেলের নিরাপত্তা এসেসমেন্ট করতে গেলে এ হোটেলের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার দেখা পাইনি। তবে অন্যান্য কর্মকর্তারা সহায়তা করেছিলেন। মনোরম পরিবেশে, এ হোটেলের রেস্টুরেন্টগুলোর খাবারের মান বরাবরের মতই অপূর্ব; সুস্বাধু ও নির্ভেজাল, বিশেষ করে এর কেক আইটেমগুলো। হোটেলটি অনেক আগে থেকেই জাকজমকপূর্ণ। এর আতিথেয়তা নজর কারা, এখানকার স্টাফরা অনেক বিনয়ী। ব্যয়বহুল এ হোটেলটির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি আরো যত্নবান হতে হবে বিশেষ করে সামনের এন্ট্রান্স এরিয়া ও ব্যাংকোয়েট হলগুলোয়।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Must Read

- Advertisement -spot_img

Related News

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here