- Advertisement -spot_img
Homeইতিহাস ও নিরাপত্তাবাংলার গণ মানুষের ভালোবাসায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও তাঁর প্রিয় পরিবার শীর্ষে ...

বাংলার গণ মানুষের ভালোবাসায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও তাঁর প্রিয় পরিবার শীর্ষে — ড. মুহাম্মদ ফজলুল হক

বাংলার শেষ স্বধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে আমাদের হৃদয়ের বন্ধন

- Advertisement -spot_img

আমরা দেশপ্রেমী সকলে উপলদ্ধি করতে পেরেছি যে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব বাঙালী মনে এক চিরন্তন ভালবাসার স্থান দখল করে আছেন। গণমন ও জনমত উপেক্ষা করে আমার বর্তমান স্বাধীন দেশের কোন সরকারই গবেষণা-ভিত্তিক নতুন ইতিহাস নির্মাণে ভুমিকা রাখার কথা বিবেচনাও করেনি। এটা দুঃখজনক। জনমত উপেক্ষা করার অস্পর্ধা যাদের-তাদের অন্ততঃ গণতান্ত্রিক বলা যায় না।এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক ও শিক্ষক সমাজের কোন বিশেষ উদ্যোগ আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি। সমাজ ও সরকারের মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধ হীনতা সত্যিই দুঃখজনক।একটা কথা আমার কাছে স্পষ্টতর হয়েছে যে বাঙ্গালি মনে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সঠিক ইতিহাস জানার আগ্রহ ও কৌতূহল অপরিসীম। দেশপ্রেমী বাংলাদেশি, দেশপ্রেমী প্রবাসী বাঙ্গালি, পশ্চিম বাংলার সিরাজপ্রেমী বাঙ্গালি, ছাত্র সমাজ, স্কুল- কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষিত জনগোষ্ঠি সবার মাঝেই এ আগ্রহের সমাবেশ লক্ষ্য করে আমি আনন্দ পেয়েছি।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব শুধু নন। তিনি ছিলেন বীর ও সাহসী নবাব, আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা,বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানও দেশপ্রেমী নবাব সিরাজউদ্দৌলা।নবাব সিরাজের চরিত্র, তাঁর রাজনীতি ও তাঁর বিরুদ্ধে অশুভ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ভাড়া করা ঐতিহাসিকরা যে সব ভুল রচনা লিখেছিলেন ইতিহাস আজও তা ক্ষমা করেনি। আমাদের দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগ আছে, ইতিহাসের অভিজ্ঞ অধ্যাপক আছেন। আমাদের প্রত্যাশা ছিল ইতিহাসের শূন্যতা পূরণে তারা উদ্যোগী হবেন।ড.মোহাম্মদ মোহর আলী ও ড. কে এম মোহসীনসহ অন্যান্যদের কিছুটা উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু যথেষ্ট নয়। গবেষণানির্ভর, তথ্যনির্ভর, বিশ্লেষণনির্ভর, নতুন ব্যাখ্যা, নতুন পরিবেশনায়প্রকৃত ইতিহাস জাতির সামনে উপস্থাপন করা আজ অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। লাল সবুজের বীর সন্তান নবাব সিরাজউদ্দৌলার উত্তর পুরুষ সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা ও আমার এ উদ্যোগের মূলকারণ শূন্যতা তুলে ধরা যেন আমাদের ঐতিহাসিক ও অধ্যাপকগণ শূন্যতা পূরণে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আমার হাইপোর্থেসিস-নবাব সিরাজ স্বাধীনচেতা, সাহসী, চরিত্রবান ও বাংলার স্বাধীনতা রক্ষায় প্রথম শহীদ মুক্তযোদ্ধা ছিলেন। ভবিষ্যতে আমাদের ঐতিহাসিকগণ তাদের গবেষণার মাধ্যমে নবাবজাদা আব্বাসউদ্দৌলা ও আমার হাইপোর্থেসিস প্রমাণ করতে পারবেন আশা করি।

পলাশী চক্রান্তের যৌক্তিকতা খুঁজে বের করার জন্যে ইংরেজ ও কিছু সংখ্যক ঐতিহাসিক ইতিহাস রচনার নামে কত কিছুই না লেখেছেন। আসলে নবাব সিরাজ ও পলাশীর ইতিহাসের প্রকৃত চিত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যাপক বাধা লক্ষ্য করা গেছে। প্রধান বাধা-প্রায় দু’শ বছরের বৃটিশ শাসন এবং দ্বিতীয় বাধা ইংরেজ ও বেশ কিছু সংখ্যক হিন্দু ঐতিহাসিকের ইতিহাসের নামে অসত্য কাহিনী প্রকাশ। ফলে এক্ষেত্রে অসত্য কাহিনীর বেড়াজালে প্রকৃত ইতিহাস বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু ইতিহাসের গতিকে রুদ্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই। তাই এসব অসত্য কাহিনীর রচয়িতাদের উদ্দেশ্য আপনা-আপনিই প্রকাশিত হয়ে পড়েছে এবং সেই সাথে ইতিহাসের প্রকৃত চিত্র মেঘে ঢাকা সূর্যের ন্যায় প্রকাশিত ও বিকশিত হয়ে পড়ছে।এসব অসাধু ঐতিহাসিকরা নবাব সিরাজের ব্যক্তিগত চরিত্র ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে যতই দোষারোপ করুক নাকেন এ কথা আজে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, তিনি ছিলেন একজন মহান দেশপ্রেমিক, সাহসী যোদ্ধা বিজ্ঞ রাজনীতিক ও ব্যক্তি চরিত্রে সহজ সরল ও বলিষ্ঠ নবাব। তিনি ছিলেন এ মাটিরই সন্তান। এই মাটির সাথে তিনি কোনদিন বেঈমানী করেন নি। তিনি এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্যে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এবং জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। ইচ্ছা করলে তরুণ নবাব বৃটিশ বণিকদের বাণিজ্য সুবিধা কিছুটা বৃদ্ধি এবং তাদের ঔদ্ধতা সহ্য করে বহু যুগ শান্তিতে নবাবী করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য তাঁর অকৃত্রিম ভালবাসার নিদর্শনস্বরূপ তিনি সব শত্রুকে চিহ্নিত করে দেশের স্বাধীনতাকে মজবুত করতে চেয়েছিলেন। দেশের প্রতি এবং দেশের মানুষের প্রতি তাঁর এই শ্রদ্ধাবোধ আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।” তবে এক্ষেত্রে অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় কিছুটা ব্যতিক্রমী বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তিনি লিখেছেন, “সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ১৪ মাত্র ১৪ দিন রাজত্ব করলেও শাসক হিসেবে তাঁর যোগ্যতা কোন দিক দিয়ে কম ছিল না। একাধারে তিনি ছিলেন “নিখাদ দেশপ্রেমিক”, “অসীম সাহসী যোদ্ধা”, “সকল বিপদে পরম ধৈর্যশীল”, “কঠোর নীতিবাদী”, “নিষ্ঠাবান”, “ধার্মিক”, এবং “যে কোন পরিণামের ঝুঁকি নিয়েও ওয়াদা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব।” রবার্ট ওর্ম লিখেছেন যে, “আলীবর্দী খুব মিতচারী ছিলেন। তাঁর আরাম আয়েশ ও হেরেম বলতে কিছু ছিল না। তিনি এক স্ত্রী নিয়েই সুখী ছিলেন। গোলাম হোসেন তাবাতাবাই লিখেছেন “আলিবর্দী খান যৌবনকাল হইতে পবিত্র সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করিয়াছেন। তিনি জীবনে মধ্য স্পর্শ করেন নাই এবং এক স্ত্রীর প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। তিনি ইবাদৎ ও ধর্মকর্ম করিয়া এবং পবিত্র কোরআন ও ইতিহাস পাঠ করিয়া সময় কাটাতেন।”

সুতরাং সিরাজউদ্দৌলা তাঁর শৈশব-কৈশোরে লাম্পট্যের ট্রেনিং নেবার মতো, রাজা-মহারাজাদের গড়ে দেয়া আর্যসুন্দরী বাঙ্গালিদের নিয়ে গঠিত হেরেমের সংস্পর্শ পান নি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নবাব সিরাজ লাম্পট্য করার সময় কখন পেলো? দেশব্যাপী ষড়যন্ত্রের আবর্তের মধ্যে প্রায় কিশোর সিরাজউদ্দৌলাকে মাত্র ১৪ মাস ১৪ দিনের মধ্যে পুর্নিয়া থেকে কলকাতা হয়ে পলাশী পর্যন্ত ১১০০ মাইল পথ চলতে হয়েছে, পাঁচ-পাঁচটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করতে হয়েছে, তাকে তো আলেকজানডারের চেয়েও দ্রুতগতিতে পথ চলতে হয়েছে। দিন কাটাতে হয়েছে ব্যক্তিগতভাবে যুদ্ধ ক্ষেত্রে কিংবা অশ্বপৃষ্ঠে, রাত কাটাতে হয়েছে ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করে। নানা আলিবর্দী খান ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানে রেখে নাতিকে গড়ে তুলে বিয়ে দিলেন সুশিক্ষিতা পরমাসুন্দরী লুৎফুন্নিসার সাথে। এই বিয়েতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে বিপুল উৎসব আয়োজন করা হয়। নবাব আলিবর্দীর জীবদ্দশায় সেই তরুণ এরূপ করার সুযোগ পেলেন কিভাবে? স্বামীর শাহাদতের পর সিরাজের তরুণী বিধবা স্ত্রী মীরজাফর ও মীরনের বিবাহ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, সারাজীবন অর্থাৎ দীর্ঘ অর্ধশতাব্দী স্বামীর কবরে কুরআন শরীফ পড়ে ও ইবাদত বন্দেগী করে কাটিয়ে দিলেন। কোন দুঃশ্চরিত্র স্বামীর অসতী স্ত্রী এমন করে কি না তাও তারা ভেবে দেখলেন না।আসলে নবাব সিরাজের চরিত্রের উপর বেগমে লুৎফার বিরাট প্রভাব পড়েছিল। উন্নত চরিত্র ও গুণাবলীর অধিকারিণী লুৎফা সারা জীবন সিরাজউদ্দৌলার প্রতি অনুরক্ত ছিলেন এবং নবাব থাকাকালীন তার উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছেন। সিংহাসনে বসার পর থেকেই সিরাজউদ্দৌলা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হন তার মোকাবেলার জন্যে দৃঢ় এবং শক্তিশালী পদক্ষেপ নেবার পেছনে তাঁর চরিত্র বলের পরিচয় পাওয়া যায়। লুৎফুন্নিসা খোশবাগে সিরাজের কবরের কাছে একখানি কুঁড়েঘর তৈরি করে বাকি জীবনটা সেখানেই কাটিয়ে দেন। কতবড় বিদূষী ও মহীয়সী নারী হলে জীবনের সব লোভ ও আয়েশ পরিত্যাগ করে তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময়টি প্রাণাধিক প্রিয় স্বামী সিরাজের ধ্যানে কাটিয়ে দেন। তিনি মাসিক যে মাসোহারা পেতেন তা দিয়ে প্রতিদিন কাঙ্গালী ভোজের ব্যবস্থা করতেন। তিনি সুদীর্ঘ আটাশ বছর ধরে এভাবে স্বামী সেবা করে ১৭৯০ সালের ১০ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন এবং সিরাজের পদতলে তিনি সমাধিস্থ হন। বেগম লুৎফুন্নিসার একনিষ্ঠ প্রেম-ভালবাসা ও ত্যাগ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালে সমুজ্জ্বল হয়ে থাকবে। আর এ ইতিহাস কি সিরাজের চরিত্রের পবিএ গুণাবলীর স্বাক্ষর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে না?

নবাব সিরাজের চরিত্রের মতো সিরাজ বংশধরগণকে জনসাধারণ্যে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পূর্বের সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত চিহ্নিত কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। নবাব আলিবর্দী খানের পরিবারের সময় থেকেই, নিজ সন্তান থাকার পরও পালক সন্তান রাখার প্রথা সিরাজ পরিবারে দীর্ঘ সময় ধরে প্রচলিত আছে। এই পালক সন্তানেরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং নিজেদের সিরাজ পরিবারের অংশ হিসেবে দাবি করে। একইভাবে দাবিদারিত্ব করে সিরাজের দু’ বোনের বংশধরেরা। আর মিরজাফর, মিরনের বংশধরদের কেউ কেউ তাদের পূর্ব পুরুষদের অপকর্মে লজ্জিত হয়ে, তাদের আসল বংশ পরিচয় থেকে সরে এসে নবাব সিরাজউদ্দৌলা বংশের অংশ কিংবা নবাবের বংশধর হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

নবাব মনসুরুল মুলক মীর্জা মোহাম্মদ সিরাজউদ্দৌলা বাদশাহ কুলি খান হায়বত জঙ বাহাদুর, পিতা : হাশেম জায়েন উদ্দিন, মাতা : আমিনা বেগম, স্ত্রী : বেগম লুৎফুন্নিসা, ভাই : দুই জন (সিরাজ সহ তিন জন), বোন : দুই জন, নানা : নবাব আলিবর্দী খান, জন্ম : ১৯ সেপ্টেম্বর ১৭২৭ ইং, জন্মস্থান : এই রূপসি বাংলায় (তৎকালিন বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে), মৃত্যু : ২ জুলাই ১৭৫৭ ইং । সিরাজের প্রিয়তমা স্ত্রী বেগম লুৎফুন্নিসা ১৭৬৭ সালে কন্যা উম্মে জোহরা ওরফে কুদসিয়া বেগমকে ১৪ বছর বয়সে সিরাজের ভাই ইকরামউদ্দৌলার পুত্র মুরাদউদ্দৌলার সাথে বিয়ে দেন। দুই আপন ভাইয়ের ছেলে-মেয়ের বিয়ে হওয়াতে সিরাজউদ্দৌলা পরিবারের বংশের বাতি জ্বলতে থাকল, যা আজও বর্তমান ।

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব, সিরাজউদ্দৌলার ফ্যামিলি ট্রি:-
*১ম-উম্মে জোহরা ওরফে কুদসিয়া বেগম।
(পিতা-সিরাজউদ্দৌলা, মাতা- বেগম লুৎফুন্নিসা)
স্বামী-মুরাদউদ্দৌলা (পিতা-ইকরামউদ্দৌলা, সিরাজউদ্দৌলার ভ্রাতুষ্পুত্র)
*২য়- শমশের আলী খান। (স্ত্রী-সৈয়দা আলীয়াতুন্নিসা বেগম)
২য়-মমতাজ বেগম (অল্প বয়সে মৃত্যু)
২য়- ফূননা বেগম (অল্প বয়সে মৃত্যু)
*৩য়- সৈয়দ লুৎফে আলী
৩য়- জায়নাল আবেদীন (নিঃসন্তান)
*৪র্থ- ফাতেমা বেগম (স্বামী-সৈয়দ মোহাম্মদ রেজা, বেগম লুৎফুন্নিসা পরিবারের ৪র্থ বংশধর)
*৫ম- হাসমত আরা বেগম (স্বামী-সৈয়দ আলী রেজা, ভারতের বীর টিপু সুলতান পরিবারের রক্তধারা বংশধর)
৫ম -লুৎফুন্নেসা বেগম (নিঃসন্তান)
*৬ষ্ঠ- সৈয়দ জাকি রেজা। স্ত্রী- ইয়াকুতি বেগম।
*৭ম- গোলাম মোর্তজা (স্ত্রী- নিখাত আরা, নবাব সরফরাজ খানের রক্তধারার অন্যতম বংশধর)
৭ম- সৈয়দ বাবু (নিঃসন্তান)
৭ম- সৈয়দা কানজো (অল্প বয়সে মৃত্যু)
৭ম- চাঁদ বেগম (অল্প বয়সে মৃত্যু)
*৮ম- প্রকৌশলী এস.জি. মোস্তাফা (স্ত্রী- সৈয়দা হোসনে আরা বেগম, বেগম লুৎফুন্নিসা পরিবারের ৮ম বংশধর)
৮ম-গোলাম মুজতবা (নিঃসন্তান)
৮ম-বেবি হামিদা বানু মুন্নি (নিঃসন্তান)
*৯ম- সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা।

♥ বেগম লুৎফুন্নিসা, স্বামী : নবাব সিরাজউদ্দৌলা, কন্যা : উম্মে জোহরা, পিতা : ইরাজ খান,মাতা : গুলশান আরা, ভাই : ইরান খান, দাদাজান : আকবর কুলি খান। জন্ম : ১৭৩৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বও (তৎকালিন বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে), মৃত্যু : ১৭৮৬ সলের ১০ নভেম্বর। নবাব সিরাজদ্দৌলার স্ত্রী বেগম লুৎফুন্নিসা ছিলেন ইরাজ খানের কন্যা।ইরাজ খান ছিলেন আতি সম্ভ্রান্ত বংশীয়। লুৎফুন্নিসার আপন একজন ভাইও ছিলেন,নাম তার ইরান খান।ইরাজ খানের পিতা আকবর কুলিখান ভাগলপুরের শাষক ছিলেন।শাহজাদা আজমের মৃত্যুর পর তিনি বাংলায় চলে আসেন।আলিবর্দী খান বংশীয় মর্যাদার জন্য ইরাজ খানকে সম্মান দেখানএবং দরবারের উচ্চপদে নিয়োগ দেন।তিনি নিজেই ইরাজ খানের কাছে তাঁর কন্যা লুৎফুন্নিসার জন্য সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

লাল সবুজের হৃদয়ের নবাব সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রী বেগম লুৎফুন্নিসা পরিবারের বংশ সিঁড়ি :-
*১ম – বদরুন্নিসা বেগম
(পিতা :- ইরান খান, ফুপু:- নবাব সিরাজউদ্দৌলার  স্ত্রী বেগম লুৎফুন্নিসা)
স্বামী :- মুরাদউদ্দৌলা (পিতা ইকরামউদ্দৌলা, সিরাজউদ্দৌলার  ভ্রাতুষ্পুএ)।
*২য় – উলফাতুন্নিসা বেগম।
*৩য় – সৈয়দ হাদী রেজা।
৩য় – গোলাম হায়দার (নি:সন্তান)।
৩য় – নাসিমা বেগম (নি:সন্তান)।
*৪র্থ – তিলাত আরা বেগম ( স্বামী: টিপু আব্বাস, ভারতের বীর টিপু সুলতান পরিবার রক্তধারার অন্যতম বংশধর)। ৪র্থ – সৈয়দ মোহাম্মদ রেজা (স্ত্রী- ফাতেমা বেগম, নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৪র্থ বংশধর)।
*৫ম – শাহজাদি বেগম। ৫ম-সৈয়দ আলী রেজা
*৬ষ্ঠ – রওশন আরা বেগম ( স্বামী: গোলাম আব্বাস)।
*৭ম – গুলশান আরা বেগম (স্বামী: সৈয়দ নাসির আলী মির্জা, ভারতের বীর টিপু সুলতান পরিবার রক্তধারার অন্যতম বংশধর)
৭ম – নুরজাহান বেগম (নি:সন্তান)।
৭ম – লুৎফুন্নিসাম বেগম (নি:সন্তান)।
*৮ম – সৈয়দা হোসনে আরা বেগম (স্বামী-প্রকৌশলী এস.জি.মোস্তাফা, নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৮ম বংশধর)
৮ম – মোবারক হোসেন (নি:সন্তান)।
*৯ম – সৈয়দা নাজনীন মুনমুন (সন্তান- ৩ জন)
৯ম – সৈয়দা সাকিনা ইমু (সন্তান – ২ জন)
৯ম – সৈয়দ মুহাম্মদ আলী রেজা মাসুম (সন্তান- ৩ জন)
৯ম – এস. জি. আব্বাস ।

তৎকালীন গভর্ণমেন্টের ১৭৭৩ সালের ১৬ই জুন তারিখের ৫৯৫নং আদেশে দেখা যায়, নবাব মুরাদউদ্দৌলা ও তার পরিবারের জন্য মাসিক ৪০০ টাকা এবং সিরাজের সহধর্মিণী বেগম লুৎফুন্নিসার জন্য মাসিক ১০০০ টাকা ভাতা বরাদ্দ করা হয়। ১৭৮৬ সালে লুৎফুন্নিসার মৃত্যুর পর কোম্পানি তার প্রদত্ত ভাতা বন্ধ করে দেয়। ১৭৯৫ সালের ৮ই মে তারিখে মুরাদউদ্দৌলার প্রাপ্য ভাতা তদীয় ওয়ারিশগণের মধ্যে বণ্টন সম্পর্কে চিঠিপত্র পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে আসা যায়।

সিরাজকন্যা উম্মে জোহরা ছাড়াও নবাব মুরাদউদ্দৌলার বদরুন্নিসা বেগম নামে আরেকজন স্ত্রী ছিলেন, যার পরিচয় এ রকম: তিনি ছিলেন সিরাজের সহধর্মিণী লুৎফার আপন ভাই ইরান খাঁন -এর কন্যাসন্তান। উম্মে জোহরার মামাতো বোন ছিলেন বদরুন্নিসা বেগম। মুরাদউদ্দৌলার ঔরসে উম্মে জোহরা বেগমের এক পুত্র ও দুই কন্যা জন্মগ্রহণ করেন, পালক কন্যা ছিলেন চারজন। মুরাদউদ্দৌলার জীবন কালেই স্ত্রী উম্মে জোহরার মৃত্যু হয়েছিল। তাঁদের মৃত্যুর পর এক পুত্র শমসের আলী খান জীবিত ছিলেন এবং মুরাদউদ্দৌলার ২য় স্ত্রী বদরুন্নিসা বেগমের উলফাতুন্নিসা বেগম নামে এক কন্যা জীবিত ছিলেন। মুরাদউদ্দৌলার প্রাপ্য ৪০০ টাকা ভাতার অংশ হিসেবে পুত্র শমসের আলী খান ১৮২ টাকা, ২য় স্ত্রীর কন্যা উলফাতুন্নিসা ৯১ টাকা, ২য় স্ত্রী বদরুন্নিসা বেগম ৯১ টাকা এবং তাঁদের দেখাশুনার জন্য উকিলের বেতন মাসিক ৩০ টাকা এবং ধর্মীয় শিক্ষার জন্য ২ জন ক্বারীর বেতন মাসিক ৩ টাকা হিসাবে ৬ টাকা, মোট ৪০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়। শমসের আলী খানের মৃত্যুর পর তাঁর প্রাপ্য ভাতা তাঁর ওয়ারিশদের মধ্যে নিম্নহারে বণ্টন করা হয়। পুত্র লুৎফে আলি ৭০ টাকা, দ্বিতীয় পুত্র জয়নাল আবেদীন ও পালকপুত্র ৬০ টাকা, স্ত্রী ৩৬ টাকা, নিকট আত্মীয় ১৬ টাকা। মোট ১৮২ টাকা। মুরাদউদ্দৌলার ২য় স্ত্রী লুৎফার আপন ভাইজি বদরুন্নিসা বেগম এবং কন্যা উলফাতুন্নিসা বেগমের মৃত্যুর পর তাদের প্রাপ্য ভাতা তাদের ওয়ারিশদের মধ্যে বরাদ্ধ করা হয়। তার কোন অংশ শমসের আলী খানকে দেওয়া হয়নি। তাতে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, শমসের আলী খান বদরুন্নিসা বেগমের গর্ভজাত পুত্র ছিলেন না। তিনি ছিলেন সিরাজ কন্যা উম্মে জোহরার পুত্র। (মুর্শিদাবাদে নিযুক্ত গভর্ণর জেনারেলের এজেন্ট ডাবলিউ. বি. বাকলে কর্তৃক বেঙ্গল গভর্ণমেন্ট সচিব অ্যাশলে ইডেনকে লিখিত ইং ১৮৬১ সালের ২৫ শে জানুয়ারি তারিখের পত্র)।

শমসের আলী খানের পালক পুত্র মারা গেলে সরকার তার প্রাপ্য ভাতা শমসের আলী খানের পুত্রকে না দিয়ে দূরবর্তী আত্মীয় মির্জা আলী খানকে বরাদ্দ করেন। তাতে বোঝা যায় পেনশন বরাদ্দের ব্যাপারে সরকার শরীয়ত আইনের কোনো ধার ধারতেন না। রেসিডেন্টের মর্জি মাফিক সিদ্ধান্তই কার্যকর হতো। সৈয়দ লুৎফে আলী ১৮৩৩ সালে একমাত্র কন্যা ফাতিমা বেগমকে রেখে ইন্তেকাল করেন। তিনি পিতার ৮০ টাকা, দাদীর ৩৬ টাকা এবং আত্মীয়ের ২৫ টাকা, মোট ১৪১ টাকা পেনশন পেতেন। (গভর্নমেন্টের ২৫শে জানুয়ারি, ১৮৩৩ ও ২৮শে এপ্রিল, ১৮৪৭ তারিখের আদেশ)।

ফাতেমা বেগম ১৮৭০ সালে কন্যা হাসমত আরা বেগম ও লুৎফুন্নেসা বেগম সহ এক পালক কন্যা রেখে মারা যান এবং তাদের নিম্নহারে ভাতা দেওয়া হয়। হাসমত আরা বেগম ৩০ টাকা, লুৎফুন্নেসা বেগম (নিঃসন্তান) ৮১ টাকা, পালক কন্যা ৩০ টাকা বরাদ্দ করা হয়। (১৮৭১ সালের ৪ঠা জানুয়ারির ৩নং আদেশ)। ফাতিমা বেগমের কন্যা হাসমত আরা বেগমের বিয়ে হয় সৈয়দ আলী রেজার সাথে। সৈয়দ আলী রেজা ১৮৯৭ সালে এবং হাসমত আরা বেগম ১৯৩১ সালের ২রা আগস্ট তারিখে ইন্তেকাল করেন। হাসমত আরা বেগমের এক পুত্র সৈয়দ জাকি রেজা এবং একজন পালক কন্যা ছিলেন। সৈয়দ জাকি রেজা মাসিক ১৫ (পনের) টাকা ভাতা পেতেন (গভ: আদেশ নং-৪১৮০ তারিখ ৩০/১/১৯৩২ এবং ১৫২ এন তারিখ ১০/৩/১৯৩২), এখানে বিশেষভাবে প্রকাশ থাকে যে, বাংলার প্রশাসনিক ও রাজস্ব বিভাগ ক্রমান্বয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হলেও ভারতের গভর্ণর জেনারেলের পক্ষে বহুকাল যাবত মুর্শিদাবাদে একজন এজেন্ট জেনারেল নিযুক্ত থাকতেন। তিনি নবাব পরিবারের পেনশনাদির খবরদারী করতেন। সদাশয় ইংরেজ সরকার অতি দয়াপরবশ হয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৬ষ্ঠ বংশধর সৈয়দ জাকি রেজাকে মুর্শিদাবাদের সাব রেজিষ্ট্রার নিযুক্ত করেন এবং পরবর্তীতে ডিস্ট্রিক্ট সাব রেজিষ্ট্রার পদে উন্নীত করেন। তিনি ১৯৩৪ সালে মুর্শিদাবাদে ইন্তেকাল করেন। এই পরিবারের দুঃখজনক অবস্থার কথা ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহর কর্ণগোচর করা হলে তিনি তদানীন্তন বাংলার গভর্ণরের নিকট সৈয়দ জাকি রেজাকে একটি সম্মানজনক চাকুরী দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। সৈয়দ জাকি রেজার পুত্র ছিলেন গোলাম মোর্তজা, সৈয়দ বাবু, কন্যা ছিলেন সৈয়দা কানজো, চাঁদ বেগম। পালক পুত্র ছিলেন ৪ জন, পালক কন্যা ছিল ২ জন। এরা সবাই ছোটখাটো চাকুরী ও ব্যবসা করে মুর্শিদাবাদে ও পূর্ব বাংলায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কেউ কেউ পূর্ব বাংলা ও পাকিস্তানে চলে আসেন। সৈয়দ জাকি রেজার পুত্র গোলাম মোর্তজা মুর্শিদাবাদে কালেক্টরেটে চাকুরী করতেন। দেশ বিভাগের পর অপশন দিয়ে এদেশে আসেন এবং রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার অফিসে চাকুরীতে নিযুক্ত হন। সেখান থেকে অবসর নিয়ে খুলনায় বসবাস করতেন। গোলাম মোর্তজার পুত্র হলেন এস.জি. মোস্তাফা ও গোলাম মুজতবা এবং কন্যা হলেন বেবি হামিদা বানু মুন্নি, পালক কন্যা-২ জন, পালক পুত্র-১জন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৮ম বংশধর এস.জি. মোস্তাফা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বাংলাদেশের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন। বর্তমানে সমাজ সেবা করে যাচ্ছেন। স্ত্রী: সৈয়দা হোসনে আরা বেগম (সিরাজের সহধর্মিণী লুৎফার ৮ম রক্তধারা এবং লুৎফা ও সিরাজের নাতনী) ছিলেন সৎ, সত্যবাদী, মমতাময়ী, গাছপালা পশুপাখির আপনজন, আল্লাহতাআলা এবং তাঁর আমলের ভক্ত, অন্যের দুঃখে দুখি, সকলের আপনজন একজন সু-গৃহিনী। কিছু পুরুষের জীবনে সাফল্য রচনায় সুন্দর মনের সুন্দর চিন্তার জীবন সঙ্গীর সুন্দর ভূমিকা থাকে।ঠিক তেমনি সৈয়দ গোলাম মোস্তাফার জীবনের প্রতিটি সাফল্যের আড়ালে পারিবারিক গৃহলক্ষ্মী ছিলেন তাঁরই রূপসী সুন্দর মনের সহধর্মিণী সৈয়দা হোসনে আরা বেগম।

সৈয়দা হোসনে আরা বেগমের মাতা গুলশান আরা বেগমও ছিলেন সিরাজের সহধর্মিণী লুৎফার ৭ম রক্তধারা। তিনি ছিলেন বড়ই সাদা মনের বহুগুণের অধিকারিনী এক অনন্যা নারী। সৈয়দ গোলাম মোস্তাফা এবং সৈয়দা হোসনে আরা বেগমের পুত্র, ঐতিহ্যবাহী নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারের তরুণ ৯ম বংশধর সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা প্রকৃতিপ্রেমী ও নবাব সিরাজের স্মৃতিধন্য “Shab” (fb id – Shab Plus) সংগঠনের নির্বাহি প্রধান এবং সাপ্তাহিক “পলাশী” ম্যাগাজিনে সহ-সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর নবাবজাদা আব্বাসউদ্দৌলা আমার হৃদয় জুড়ে আছেন। আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া যে, নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৯ম রক্তধারা বংশধর সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা বেঁচে আছেন সোনার বাংলাকে নিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সুন্দর সব স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। জাপান যদি তাদের রাজবংশকে আড়াই হাজার বছর টিকিয়ে রাখতে পারে, বৃটেন যদি তাদের রাজপরিবারকে আটশত বছর ধরে রাখতে পারে, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভুটান,ভারত সহ আরও অন্যান্য দেশ যদি তাদের রাজ পরিবারকে সম্মাননা দিয়ে থাকতে পারে ও দিচ্ছে, তাহলে আমরা কেন বাংলার গর্বিত দেশপ্রেমী ঐতহ্যবাহী নবাব পরিবারটিকে এবং পরিবারটির ৯ম প্রজন্ম সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করবো না কেন ? এ বিষয়ে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ ও সরকারের মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধহীনতা সত্যিই দুঃখজনক। আমার জীবনের দীর্ঘকালিন গবেষণায় ও নিরপেক্ষ জনমত যাচাইয়ে আমার কাছে স্পষ্টতর হয়েছে যে, বাংলাদেশিদের মনে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবার আজও শীর্ষে অর্থাৎ প্রথমে অবস্থান করছেন। তাইতো দেশপ্রেমিক সবার মাঝেই এ আগ্রহের সমাবেশ লক্ষ করে আমি আনন্দ পেয়েছি এবং গর্ববোধ করি। সিরাজ বাংলার সন্তান, বাংলার গর্ব। তাইতো বহুযুগের ব্যবধানে আজ বাংলার দেশপ্রেমিক আমজনতা হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে হৃদয়ের ভালবাসায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারকে বাংলার গর্ব বলে মনে করে ও আখ্যায়িত করে।

ঢাকা প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর মিলিটারি হিস্ট্রি (CMHD) অনুষ্ঠিত পলাশী শীর্ষক আলোচনা সভায় (২৩ জুন ২০১৪) সাবেক সেনা প্রধান লেঃ জেনারেল (অব.) মোঃ নুরউদ্দিন খান, কর্ণেল (অব.) শেখ আকরাম আলী, শিক্ষাবিদ ড. রমিত আজাদ, ইতিহাসবিদ ড. কে এম মোহসীন সহ সাবেক সেনা কর্মকর্তারা ঐতিহ্যবাহী নবাব সিরাজউদ্দৌলা রক্তধারার ৯ম প্রজন্ম সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেবকে “নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা” উপাধিতে সম্মানিত করেন। নবাবজাদা ঢাকার দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় এবং আহসান উল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং মাষ্টার্স কোর্স কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেছেন। গোলাম আব্বাস আরেব একজন নিসর্গ প্রেমিক এবং বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির জাতীয় দৈনিক ও ম্যাগাজিনের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, লেখক, গবেষক। আমার দীর্ঘকালিন গবেষণার প্রিয় বিষয় নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবার। জীবনের শেষ বয়সে ২০১১ সালে বহুকষ্টে খুঁজে বের করেছি এক মহামূল্যবান রত্ন – নবাব সিরাজউদ্দৌলার রক্তধারা ৯ম প্রজন্ম সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলাকে। এই শুভযাত্রায় অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে নবাবজাদা সৈয়দ গোলাম আব্বাসকে দোয়া, ভালবাসা, আশির্বাদ ও শুভ কামনা রইলো।

কিছু বন্ধন চিরকালের। যেমনটি বাংলার শেষ স্বধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং তাঁর পরিবারের নতুন প্রজন্মের সাথে আমাদের হৃদয়ের বন্ধন। ঐতিহ্যবাহী নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারে সৈয়দ গোলাম আব্বাস ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলার জন্ম (পিতা : প্রকৌশলী এস.জি.মোস্তাফা, মাতা : সৈয়দা হোসনে আরা বেগম)। তিনি বাংলার গর্বিত বীর দেশপ্রেমী পরিবারের সন্তান ও জন্ম সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। বংশধারায় তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারের সরাসরি ৯ম বংশধর। সৈয়দ গোলাম আব্বাস ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা বাংলার আপনজন এবং আমারও আপনজন। পেশায় তিনি লেখক, গবেষক, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক এবং সাপ্তাহিক পলাশীর সহ-সম্পাদক (সাবেক সাব এডিটর)। তিনি সৎ এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী। আমি তাঁহার জীবনের সর্বাঙ্গীন উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করি। সমর্থন করি ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় গড়া, তাঁর সকল সুন্দর উদ্যোগকে। ১৯ সেপ্টেম্বর নবাব সিরাজউদ্দৌলার শুভ জন্মবার্ষিকী। আমরা নবাব সিরাজউদ্দৌলা, নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা ও বাংলার এই ঐতিহ্যবাহি পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধাসহ সালাম জানাই।                                                

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Must Read

- Advertisement -spot_img

Related News

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here