আইজ্যাক নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র : প্রত্যেক ক্রিয়া একটি সমান এবং বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়ামূলক বল তৈরি করে। মহাকাশে রকেট এবং ইঞ্জিনগুলি এই সূত্র অনুসারে আচরণ করে।
যখন কোনও রকেট এক প্রান্তে (লেজের দিক থেকে বাইরের স্পেসে) জ্বালানি ছড়িয়ে দেয়, তখন তার অন্য প্রান্ত (রকেটের মাথা) বিপরীতমুখী বলের সমান প্রতিক্রিয়ায় সামনের দিকে এগিয়ে যায় বাতাসের অস্তিত্ব ছাড়াই।

যদি আরো প্রশ্ন আসে আপনার মনে যে বাতাস না থাকলে এই বিপরীত বল তৈরী হয় কিসের সাথে ধাক্কা লাগে? বা লেজের দিকে থেকে যে জ্বালানি বের হয় তা কিসের সাথে প্রতিক্রিয়া করে ? খালি খালিতো আর প্রতিক্রিয়া করতে পারেনা। আমি মনের করি এর উত্তর হচ্ছে খালি বলতে কিছু নেই। মহাশূন্যে (এমনকি আপনার ঘরের দুই দেয়ালের মাঝ থেকে সমস্ত বাতাস বের করে দিলেও সেখানে “খালি” একথা বলা যাবেনা) ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি আছে যা মহাকাশের ৯০ ভাগেরও বেশি জায়গা দখল করে আছে। স্পেসে এছাড়াও গ্যাস, ধূলিকণা, আলো, ক্ষেত্র এবং মাইক্রোস্কোপিক কণা রয়েছে l

এরপর আরেকটি প্রসঙ্গে আসি। জ্বালানিতে আর বছরের পর বছর থাকতে পারেনা একটি স্পেস শিপে। আপনি দেখবেন রকেট আকাশে ওড়ার কিছুক্ষন পর তার প্রধান জ্বালানির অংশটি (Main Fuel Part) খসে পরে গেছে। এরপর সে বাকি জ্বালানি ইঞ্জিন নিয়ে এগিয়ে যায় l কিন্তু, একসময় জ্বালানি ফুরিয়ে যায়, ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়া হয়। তাহলে এখন আর বিপরীত মুখী বল কে তৈরী করবে? এর উত্তর হচ্ছে, মহাকাশে মধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই বললেই চলে। ফলে স্পেস শিপ গুলো তার জ্বালানি প্রথমে বেবহার করে যে গতি পেয়েছিলো তা নিয়েই এগিয়ে যেতে পারে। তবে হ্যাঁ, সূর্যের আকর্ষণ ও অন্যান্য গ্রহের gravitation কাজ করে।

তাই স্পেস শিপ (space craft to say in general) নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরা আরো অনেক পুরোকৌশল ও প্রযুক্তি প্রয়োগ করেছেন।তবে মনে রাখুন, মানব জাতি এখনও স্পেস শিপ-এ চরে মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারেনি। যেটা করেছে সেটা মানুষ বিহীন। তাকে স্পেস প্রব বলে। স্পেস প্রবগুলো যখন কোনো গ্রহ পরিভ্রমণকালে যে ট্র্যাজেক্টোরিটি করে তখন সে সেই গ্রহ থেকে গ্রাভিটি এসিস্ট গ্রহণ করে আরো গতি সঞ্চয় করে. সে এমনিভাবে উপগ্রহের কক্ষপথে ঘোষকে প্রদক্ষিণ করে এবং এমনি এক পর্যায়ে তা থেকে বের হয়ে যাবার সময় উক্ত গতির শক্তি gravity assist এর মাধ্যমে গতি অর্জন (velocity) করে। বৃহস্পতি গ্রহ প্রদক্ষিণ করার সময় ভয়েজার-২ এই velocity লাভ করে। এরপর ভয়েজার-২ শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন গ্রহ থেকেও velocity অর্জন করে l
* * এক্ষেত্রে সূর্যের বলয় গুলোর বাইরে না যাওয়া পর্যন্ত স্পেস শিপের গতি একটু একটু কমতে থাকে। এমনি এক বাধা অতিক্রম করছে এখন ভয়েজার-১ স্পেস প্রোব। এটি আজ থেকে ৪০ বছর আগে পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। যার গড় গতি সেকেন্ডে -এ ১৬ মাইল। ভয়েজার – ১ এখন সূর্যের শেষ বলয় হিলস্ফিয়ার এর ভিতর দিয়ে ক্রমশঃ এগিয়ে যাচ্ছে & আর কিছু কাল পরেই OUTER SPACE এ পৌঁছানোর পর এটি সূর্যের গ্রাভিটেশনাল আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।