- Advertisement -spot_img
Homeরাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাগোয়েন্দা ও গুপ্তচর সংস্থা: পার্থক্য ও কাজের ধরণ

গোয়েন্দা ও গুপ্তচর সংস্থা: পার্থক্য ও কাজের ধরণ

ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে মিথ্যার স্বরূপ উন্মোচন

- Advertisement -spot_img

গোয়েন্দা সংস্থা (Detective Agency): এ সংস্থার লোকেরা নাম পরিচয় প্রকাশ করে বা উক্ত পরিচিতির power বেবহার করে কাজ করে। তাদের কাজগুলো রাষ্ট্রীয় আভ্যন্তরীন সাধারণ নিরাপত্তা ও শৃঙ্গলা রক্ষার বিষয়ে।  গোয়েন্দা সংস্থার উদাহরণ?  যেমন: NSI, SB, DB, CID, Pinkerton NDA, Perspecta, AMX Detectives. তৃতীয় বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা সাধারণত তাদের গোয়েন্দা কাযে অগ্রসর হতে প্রকাশ্যে তথ্য, উপাত্ত, নমুনা সংগ্র করে। তাদের প্রকাশ্যে তথ্য সংগ্রহ করার কাজকে বলে OSINT.

গোয়েন্দা সংস্থার লোকের বাস্তব ছবি (attribution: Oklahoma City Police Department, CC0, via Wikimedia Commons)

গুপ্তচর সংস্থা (Intelligence Agency): এ সংস্থার লোকেরা কখনোই নাম পরিচয় প্রকাশ করেনা।  তারা তাদের কাছে দেয়া বিশেষ অস্ত্র, প্রযুক্তি ও অর্জিত ট্রেনিং ও দক্ষতা দিয়ে কাজ সম্পাদন করেন। রাশিয়ার কেজিবি একটি বিখ্যাত গুপ্তচর সংস্থার উদাহরণ ।[1]

দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে গুপ্তচরেরা গোপন তথ্য সংগ্রহ করেন। তারা ২ প্রনালিতে তাদের এ কার্য সম্পাদন করে থাকেন:-  

১- কভার্ট ইন্টেলিজেন্স :   যেমন সাংবাদিকের বেশ ধরে বা কূটনীতিকের বেশ ধরে এ কাজে নামা । তারা ধরা পড়লেও কখনোই স্বীকার করেননা তারা সাংবাদিক নন বা কুনীতিক নন। যেমন: জনপ্রিয় ইংরেজি থ্রিলার ফিল্ম  007 এর  জেমস বন্ড ।

গুপ্তচর সংস্থার লোকের অনুমিত ছবি (attribution: https://twitter.com/EyeDhaka/status/1696602356941721988)

গুপ্তচর সংস্থা এছাড়াও দেশের স্বার্থ হাসিল করতে বিদেশের মাটিতে অপারেশন (মিশন) চালায়। এ কাজে প্রয়োজনে হয় তারা বিদেশী তৎপরতা বিনষ্ট করে দেন অথবা গোপন মিশন চালিয়ে গোপন তথ্য উদ্ধার করে নিয়ে আসেন । এ ধরণের মিশনগুলুকে বলে এস্পিওনাজ । এস্পিওনাজ ওয়ালারা কোনো কালেই নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেনা । যান গেলেও করেনা । যদি গোপনে খবর পান কেউ প্রকাশ করতে যাচ্ছে তাহলে তাকে হত্যা করা হয় । তাদের লোকেরা সৃষ্টির  পর থেকে মিডিয়ায় আসেনি বা তাদের কোনো এজেন্টের সাথে কারো সাক্ষাৎতের ছবি প্রকাশ হতে দেয়না । এ ধরনের একটি সংস্থা হচ্ছে যেটির নামের সাথে উদ্ভ্রান্তরা আমাদের দেশের তরুণ নেতা ভিপি নুরুল হক নূরকে জড়িয়ে নাজেহাল করে। এজন্যই দেখা যায় কোনো এক তামাশা প্রিয়র বানানো একটি ছবি উদ্ভ্রান্তরা ভাইরাল করার পর ওই সংস্থাটির অন্য কোনো লোকের দুনিয়া জুড়ে কোনো কালেও একটি ছবিও দেখতে পাওয়া যায়না ।

যদি কোনো কারণে কোনো ছবি দুর্ঘটনাক্রমে লিক হয়, তাহলে, এ ধরনের গোয়েন্দা সংস্থা এক্ষেত্রে তা নিষ্ক্রিয় করে দেয়ার জন্য ফিজিক্যাল হামলা চালানো হয় পত্রিকা বা প্রিন্ট মিডিয়া অফিসে (সাবোটাজ) অথবা সেটি অনলাইন পত্রিকা বা অনলাইন মিডিয়া হলে সাইবার হামলা চালানো হয়  সেই নেটওয়ার্কে (যাকে CNA বলে) ।[2]

ছবি: ক্ল্যান্ডেস্টাইন একশন l Attribution: Oficersky RomansMoscowbugel852@gmail.com, CC BY 3.0 <https://creativecommons.org/licenses/by/3.0>, via Wikimedia Commons

২-  কাউন্টার গুপ্তচর সংস্থা (Counter-Intelligence Agency): বহিঃশত্রু দেশের অভ্যন্তরে নাশকতা বা সাবোটাজ চালাতে যাচ্ছে এ খবর তারা আগেভাগেই সংগ্র করে তা প্যারালাইজ করে দেন। ইংরেজিতে এ কাজকে বলে কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স। উদাহরণ: কাজী আনোয়ার হোসেন এর স্পাই থ্রিলার সিরিজ মাসুদ রানার সংস্থা বিসিআই।

৩- ক্ল্যান্ডেস্টাইন ইন্টেলিজেন্স (Clandestine) : এরা অন্য বেশে মুভ করেননা। এদের মুভমেন্ট ছায়ার মত। এক অদৃশ্য জগৎ। এরা তখনি দেখা দেয় যখন শত্রুকে আঘাত করার সময়ের প্রাক্কালের মাথায় । যেমন দেখা গেলো হটাৎ একটি অফিসে ড্রোন হামলা হয়েছে বা নদীর মাঝে একটি সাবমেরিন জেগে উঠে মিসাইল হামলা চালিয়েছে। ক্ল্যান্ডেস্টাইন মিশন চালিয়েছে এ ধরনের একটি সংস্থার উদাহরণ হিসাবে তৎকালীন দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধকালীন Adolf Hitler এর নাৎসি জার্মানির The Abwehr এর নাম উল্লেখ করা যেতে পারে।

ছবি: ক্ল্যান্ডেস্টাইন একশন l Attribution: U.S. Navy photographer, Public domain, via Wikimedia Commons

আধুনিক গুপ্তচরবৃত্তি পেশায় যেসব পন্থা, পদ্ধতি, প্রযুক্তি ও কৌশল বেবহার করে (যাকে ইংরেজিতে এক কথায় Trade craft বলে) তাকে কয়েকটি প্রকারে ভাগ ও সংজ্ঞায়িত করা হয়। যেমন:

চিত্রোতথ্য গুপ্তঅনুসন্ধান (IMINT), নিচকাশ ও মধ্যাকাশ গুপ্তঅনুসন্ধান (Airborne ISR), শত্রুর অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি পরীক্ষার গুপ্তঅনুসন্ধান (TECHINT), রেডিও, ইলেট্রোম্যাগ্নেটিক পালস এবং ইলেকট্রনিক সেন্সর বেবহার করে গুপ্তঅনুসন্ধান (ELINT), সংকেত গুপ্তঅনুসন্ধান যার মধ্যে রয়েছে কোডব্রেকিং এবং  ইভসড্রপিং (SIGINT), রাসায়নিক, জৈবিক, এবং শাব্দিক স্বাক্ষর গুপ্তঅনুসন্ধান বা পরিমাপ এবং স্বাক্ষরিক  গুপ্তঅনুসন্ধান (MASINT) এবং মাঠকর্মীর গুপ্তঅনুসন্ধান (HUMINT) যা মধ্যযুগ থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের আগ পর্যন্ত এমনকি দ্বিতীয়  বিশ্বযুদ্ধে কিছু কিছু ব্যবরিত হয়েছে।  অগণতান্ত্রিক বা তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নত সংস্থাগুলো HUMINT পর্যায়েই এখনো তাদের  বেশিরভাগ  কাজ করে যার মূল কারণ দেশের শত্রু দমনে এনগেজ না হয়ে মধ্য যুগীয় কায়দায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের পিছনে অধিকাংশ সময় ও প্রচেষ্টা ব্যয় করা ।

ছবি: এনিগমা মেশিন (attribution: Ben Slivka, CC BY-SA 3.0 http://creativecommons.org/licenses/by-sa/3.0/, via Wikimedia Commons)

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কুখ্যাত নাৎসি নেতা এডলফ হিটলারের ইন্টেলিজেন্স মেসেজ সাঙ্কেতিকভাবে (SIGINT) পাঠানোর একটি সেরা মোচনে ছিল এনিগমা। জার্মানির একটি ডুব জাহাজ এমেরিকান যুদ্ধ বিমান থেকে ডেপ্ত চার্জে বিকল হয়ে ভেসে উঠলে তার মেরিন সেনাদের আমেরিকান নৌসেনার তাদের জাহাজে আশ্রয় দেবার সময় ওই ডুব জাহাজ থেকে একটি Enigma Machine উদ্ধার করে এবং জীবিত ওই জার্মান নাবিকেরা সপক্ষ ত্যাগী করে তোলার পর তাদের কাছ থেকে এনিগমার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয় অর্থাৎ এর কোড ব্রেকিং (cryptanalysis) করতে সক্ষম হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে হিটলারের জার্মান বাহিনীর হেরে যাবার পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে Enigma মেশিন পশ্চিমা মিত্র বাহিনীর হাতে আসা ও তার রহস্য উদ্ঘাটন ।

একটি কথা জানা দরকার যে ইন্টেলিজেন্স ডাটা অনেক পুরোনো হয়ে গেলে তার আর কোনো একটিভিটি না থাকলে বা সময় ও প্রেক্ষাপটের বেপক পরিবর্তনের ফলে উক্ত ইন্টেলিজেন্সের আর কার্যকারিতা না থাকলে তাকে পাবলিকলি প্রকাশ করা হয়। এ প্রকাশকে ডিক্লাসিফিকেশন বলে। তাই বর্তমানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের, ভিয়েতনাম যুদ্ধের ও কিউবা সংকটের কিছু ডিক্লাসিফায়েড ডাটা পাওয়া যায়। Airborne ISR এর মাধ্যমে তোলা নিচের ছবিটি হচ্ছে কিউবা সংকটের প্রাক্কালে আমেরিকার গোয়েন্দা বিমান U2 থেকে তোলা কিউবা উপদিপে গোপনে তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়নের পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্য পরিবহনকারী নির্মাণাধীন ব্যালিস্টিক মিসাইল সাইট।

কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের একটি ঐতিহাসিক উদঘটনা ছিল তৎকালীন কিউবার গোপন মিসাইল সাইটের আবিষ্কার ।
ছবি: গোয়েন্দা বিমান U2 থেকে তোলার ছবির বিশ্লেষিত চিত্র।
Image attribution: unknown Lockheed U-2 pilot, Public domain, via Wikimedia Commons

[1] বর্তমানে ডিসম্যান্টলেড ।

[2] Computer Network Attack


        

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Must Read

- Advertisement -spot_img

Related News

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here