- Advertisement -spot_img
Homeসমাজ ও নিরাপত্তাসামাজিক অধঃপতনের পাশাপাশি অবক্ষয়, অঘটনের জন্যও পর্নোগ্রাফি ও পাবজিগুলোকে দায়ী করা উচিত

সামাজিক অধঃপতনের পাশাপাশি অবক্ষয়, অঘটনের জন্যও পর্নোগ্রাফি ও পাবজিগুলোকে দায়ী করা উচিত

- Advertisement -spot_img

নারীদের ইজ্জত অlভ্রুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, নারীদের অর্থনৈতিক করুণাবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ও শহরগুলোতে উঠতি বয়সী কিশোরদের জন্য আউটডোর গেমসের অভাবকে কাজে লাগিয়ে পর্নোগ্রাফির ও পাব্জিগুলোর অবৈধ ঘৃণ্য আন্ডারগ্রাউন্ড-ব্যবসায়ীরা কালোটাকা অর্জন করেই যাচ্ছে। গবেষণামতে, এদের কারণে আরো অন্যান্য অনেক আনুষঙ্গিক অপরাধ, ও পরোক্ষ অঘটন সংঘটিত হয়। যেমন নারী ও শিশু পাচার, পাচারকৃত নারীদের দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা, পাচারকৃত শিশুদের উটের জকি করা, সমাজে কিশোর অপরাধ, নেশাগ্রস্ত হওয়া, ছিনতাই, কিশোর গ্যাং-এর উৎপত্তি ও আধিপত্য বিস্তারে রক্তপাত সংঘটিত করা ইত্যাদি। মানব সভ্যতার ও মানবকুলের সবচেয়ে বড় শত্রু এই পর্নোসাইট ও পাবজিগুলো। পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগেকার যুগে কিন্তু এতো সামাজিক অবক্ষয় ছিলোনা। কারণ তখন পর্নোগ্রাফিক ভিডিও, ছবি, সাইট, ও পাবজি গেমস ছিলোনা।

আধুনিক যুগে প্রথমে ভিসিআর, ভিসিডি, এরপর কম্পিউটার ও ইন্টারনেট, এবং সর্বশেষ মোবাইল ফোনের স্ক্রিন আসার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে এগুলো ভাইরাসের ন্যায় ছড়িয়ে পড়ে। আর, আজকাল টাচমোবাইল সহজলভ্য হওয়ায় ও একই সাথে ইন্টারনেট হাতের নাগালে থাকায় এই পর্নোসাইটগুলো নারীদের প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ ও সম্মানের জায়গাগুলো কলুষিত করছে। এমন এক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যে এখন সমাজের কিছু অংশ নারীদের ভোগের পণ্য মনে করছে। পথে ঘটে যানবাহনে চলা ফেরায় নারীরা নাজেহালের শিকার হচ্ছেন। সমাজের সাধারণ মানুষ তাকে সম্মানের চোখে দেখতে, সহায়তা করতে চায়না। যানবাহনে সুযোগ পেলেই তারা নারীকে হয়রানি করার অপবিত্র চিন্তা করে। সন্ধ্যার পর একা একা নারীরা গ্রামেতো দূরের কথা, শহরে নির্জনে চলাফেরা করতে শিউরে উঠেন। অন্যদিকে তাই সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরতে তারা যখন গণপরিবহনে উঠেন, তখন পর্নসাইট দেখে বদমায়েশ ও বিবেকহীন লোকগুলো নারীদের হয়রানি করার হিন সুযোগ খুঁজতে থাকে।

শুধু কি তাই, অফিসে ও ফেক্টরীতে বিপথে যাওয়া লোকগুলো নারীদের হয়রানি করার চিন্তা করে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে যে লোকগুলো মানুষ নামের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আর নেই, তারা হয়ে গেছে দুপায়ে চলা দুষ্টবুদ্ধির জানোয়ার। কিন্তু রাবনগুলো একবার ভাবেনা তার বাড়িতেও তার বোন, স্ত্রী রয়েছেন। বা তারাই আবার কোনো না কোনো নারীর সন্তান।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ভালো সামাজিক ছায়াছবি, নাটক ইত্যাদি আবার প্রেক্ষাগৃহে ও টিভিতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে শিল্পী ও চলচিত্র সমাজের। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগী ভূমিকাসহ পৃষ্ঠপোষকতাও জরুরি। অবাধ ইন্টারনেটের ছড়াছড়ির উপর নিয়ন্ত্রন ও মনিটরিং থাকতে হবে। ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট কন্ট্রোল বিধিমালা জারি করা ও তার প্রয়োগ করতে হবে। আমরা চাই একটি সুস্থ, উন্নত, পাপ ও কলুষমুক্ত আলোকিত সুখী সমাজ।

এখন শহরগুলো হয়ে গেছে এপার্টমেন্টের আখড়া। পরিকল্পনাহীন যত্রতত্রভাবে এখানে ওখানে আরো তোলা হয়েছে স্থাপনার পর স্থাপনা । কিশোরদের সুস্থ বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ, পার্ক, লেইক বলতে কিছুই নেই। যত্রতত্র স্থাপনাগুলো তৈরির অনুমতি দেবার আগে শহরপরিকল্পনায় এগুলো আদৌ ছিল কিনা প্রশ্ন আসে! সুস্থভাবে বেড়ে উঠার জন্য শিশুদের আউটডোর খেলার মাঠের বিকল্প নেই। আর এগুলো নেই বলেই তাদের সে অভাব মেটানোর জন্য কিশোররা ঝুকে পড়ছে ভিডিও গেমসের উপর। পাবজি ভিডিও গেমসগুলোয় দেয়া থাকে নানারকম ধবংসাত্মক, নৃশংস এপিসোড ও পর্ব। এমনকি কতগুলোতে থাকে 3D-4D ডাইমেনশন সাপোর্টেড সেলফ ট্রিগারড এনটিটি। এর সহায়তায় একজন কিশোর ভিডিও-গেমসের জগতে প্রবেশ করে নিজেই হয়ে উঠতে পারে ভার্চুয়ালি ধ্বংসাত্মক একজন যুদ্ধনায়ক বা ওয়ারহিরো। দিনের পর দিন এসব খেলে সে কিশোরটি মানসিকভাবে ভার্চুয়াল জগতের অংশ হয়ে পরে। বাস্তবে যখন সে সমাজে মেশে, তখন তার মানসিক ভার্চুয়াল অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটে, এবং এক পর্যায়ে কোনো ইস্যুতে নৃশংস আচরণ করে বসে। এরমধ্যে সহপাঠী বা বন্ধুকে একাই বা দলবদ্ধভাবে আঘাত করা, প্রহার করা, ভয়ভীতি দেখানো, টাকার প্রয়োজনে ছিনতাই করা, প্রতিপক্ষ দলকে পরাভূত করতে হুমকি দেয়া সহ অস্ত্রের প্রয়োগ ও রক্তপাত ঘটানো ইত্যাদি অপকর্ম বিস্তার লাভ করে।

এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। কিশোররাই যুবক হয়ে একসময় দেশ চালাবে। তাই শহর পরিকল্পনায় নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মেধার পরিচয় দিতে হবে। এখনো যে সমস্ত জায়গা খালি আছে সেগুলোতে পার্ক, খেলার মাঠ তৈরী করতে হবে। আবর্জনাযুক্ত জলাশয়গুলো পরিষ্কার করে সৌন্দর্য বর্ধনকারী লেক তৈরী করতে হবে। তাতে বোটিং সহ মাছ ধরার বেবস্থা থাকতে হবে। অন্যদিকে হারিয়ে যাওয়া দেশীয় খেলাগুলোর পুনর্ভবা ঘটাতে পৃষ্টপোষকতা করতে হবে শিশু একাডেমিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে। অপরদিকে, ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রকারী সংস্থাকে পাব্জিগুলোর উপর এক্সেস রেসট্রিকশন প্রয়োগ করতে হব।

গড়ে উঠুক আগামীর প্রজন্মের জন্য সুন্দর বাসযোগ্য একটি দেশ।

Written by – Syed Tanvir Yousuf, an MA in English EWU, ex British Civil Servant & SPO Canadian High Commission

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Must Read

- Advertisement -spot_img

Related News

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here